প্রত্যয় নিউজডেস্ক: একটি ঘরের আশায় ইউপি সদস্যের কাছে দেয়া হয় এনআইডি কার্ড ও ছবি। পরে সেই ঘর পাওয়ার আশ্বাসে একাধিকার ইউপি সদস্যের শয্যাসঙ্গী হন গৃহবধূ। কিন্তু তারপরও ঘর না পেয়ে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছেন তিনি।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন টনকি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে কুমিল্লার নারী-শিশু আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। বিষয়টি এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ঘটনা তদন্তে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদালত কুমিল্লার পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার আদালত থেকে মামলার নথি পিবিআই কুমিল্লা কার্যালয়ে পৌঁছায়।
মামলার অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন টনকি গ্রামের এক সিএনজি চালকের স্ত্রী একটি বাসগৃহের জন্য স্থানীয় ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মজিবুর রহমানের কাছে অনুরোধ করেন। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ওই গৃহবধূকে একটি ঘর দেয়ার আশ্বাসে তার ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেয়ার পর তার বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন ইউপি সদস্য মজিবুর রহমান।
এক পর্যায়ে তাকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিলে ওই গৃহবধূ প্রথমে রাজি না হলেও ঘর দেয়ার প্রলোভনসহ নানা কৌশলে তাকে ধর্ষণ করেন মজিবুর রহমান। কিন্তু সরকারি বরাদ্দে ঘর না পাওয়ায় ইউপি সদস্যকে চাপ দিতে থাকেন গৃহবধূ।
সর্বশেষ গত ১০ সেপ্টেম্বর ঘটে বিপত্তি। ওই গৃহবধূর সঙ্গে ফের শারীরিক সম্পর্ক করতে যান অভিযুক্ত ইউপি সদস্য। এ সময় গৃহবধূ বাধা দিলেও তিনি ধর্ষণ করার চেষ্টা করলে গৃহবধূর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ সময় পালিয়ে যান ইউপি সদস্য।
ওই গৃহবধূ বলেন, ‘আমি সুস্থ হয়ে ঘটনার দু’দিন পর থানায় মামলা করতে গেলে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা মামলা গ্রহণ না করে আদালতে অভিযোগ দায়েরের পরামর্শ দেন। ১৪ সেপ্টেম্বর অভিযোগ দায়ের করলে আদালত ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুমিল্লার পিবিআইকে নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু এখনও মাঠ পর্যায়ে তদন্ত শুরু হয়নি।’
তবে ইউপি সদস্য মজিবুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এলাকার একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে ওই গৃহবধূকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়েছে। এ সব ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। ষড়যন্ত্রকারীরা আমার বিরুদ্ধে একে একে চারটি মামলা দিয়েছে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীম মিয়া বলেন, আদালত থেকে ধর্ষিতার অভিযোগ পেয়েছি। তাকে ডাক্তারি পরীক্ষাসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি কামরুজ্জামন তালুকদার বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার কাছে এ ধরনের কোনো অভিযোগ করতে কেউ আসেনি। যদি কেউ অভিযোগ করতো তাহলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হতো।